ওস্তাদ ছাড়াই পাঁচশ শিষ্যের ওস্তাদ উলিপুরের নজির হোসেন কবিরাজ

Written by: bdbondhonit


সম্পর্কে : এই লেখক অন্যদের সাথে কিছু শেয়ার করতে আগ্রহী নাও হতে পারে

5 years ago | Date : September 5, 2020 | Category : গল্প,জানা-অজানা | Comment : 2 Replies |

যাত্রা ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় লোকনাট্য ধারা।  এগুলো প্রধানত চার ঘন্টা ব্যাপী আয়োজনে রয়েছে বিপুল বিনোদন। কর্নেট,ফ্লুট বাঁশি আর ঢোঁলের উচ্চ শব্দ ও চড়া আলোর ব্যাবহার এবং দৈত্যাকার মঞ্চ নাটকীয় উপস্থাপনার বৈশিষ্ট্য।  ছন্দভাব ছিলো মন মাতানো।  এর মধ্যে মিশে আছে বাঙালির দীর্ঘকাল ব্যাপ্ত শিকড় বিস্তারী সাংস্কৃতির আনন্দ বেদনা।  কালের বিবর্তনে আজকে যাত্রাপালা হারিয়ে যাচ্ছে।  তবুও সেই যাত্রার রঙ, ঢঙ, স্মৃতি জড়িয়ে ধরে আছে যাত্রা প্রিয় কিছু যাত্রা অভিনয় শিল্পী, যাত্রা সঙ্গীত শিল্পী, যাত্রা পরিচালক ও যাত্রায় কাজ করা মানুষ গুলো। এমন এক জন মানুষ যিনি কুড়িগ্রাম জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মঞ্চায়িত হওয়া প্রায় ১৫০০ যাত্রাপালা ও নাটকের পরিচালনা করেন ।

ওস্তাদ ছাড়াই প্রায় পাঁচ শতাধিক শিষ্যের গুরু মোঃ নজির হোসেন কবিরাজ। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামে ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত আইজুদ্দিন ব্যাপারী ও মাতা মৃত রহিমা বেগম। পেশায় তিনি একজন পশু চিকিৎসক। এলাকায় তাকে সকলেই ওস্তাদ বলে ডাকেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশ। এই সামান্য লেখাপড়ায়ও সৃজনশীলতার কমতি নেই মানুষটার মাঝে। গীতিকার,সুরকার ও পরিচালনায় তার দক্ষতা ছিল, যা ওস্তাদ ছাড়াই নিজে নিজেকে গড়িয়ে তুলেছিলেন।  কোনো  ওস্তাদ ছাড়াই তিনি প্রায় পাঁচশ শিষ্যের ওস্তাদ!  অবাক বিষয় হলেও এটাই সত্যি। আব্দুল আলীম, আব্দুল লতিফ, আতা খান, সুবীর নন্দীর মতো শিল্পীদের গানে অনুপ্রেরণা পেয়ে তিনি নিজে ও কিছু বন্ধু সহ শুরু করে পথচলা।  শুরুতে যাত্রা পরিচালনার পাশাপাশি  যাত্রাপালার মঞ্চে নিজে অভিনয় ও গান গাইলেও  পরবর্তীতে তার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে শুরু করে দেয় যাত্রাপালা ও নাটক পরিচালনা করা। 

তিনি প্রেমের ফাঁসি, হিংসার পরিণাম, কলঙ্কের ফুল, গরীবের ছেলে, রিক্সাওয়ালার ছেলে, প্রেমের সমাধীর তীরে, কাঞ্চনমালা, গরীব কেন কাঁদে, ও আবির ছড়ানো বাংলার মসনদ এর মতো অনেক নাটক ও যাত্রাপালা পরিচালনা করেন। শুধু তাই নয় ৩০ টির মতো যাত্রাপালা রচনার পাশাপাশি গান রচনা করেন প্রায় ২ শতাধিক। যা তিনি এখন তিনি নিজে নিরবে গেয়ে যান। বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে বাঁশি, হারমোনিয়াম, তবলা,  জুড়ি, ঢোল, খোল, বেহালা যেন তার মনে গেঁথে আছে। তাঁর  হাতে আসলেই যেনো বাদ্যযন্ত্র গুলো নিজে নিজেই বেজে উঠে। সর্বশেষ তিনি ”আবির ছড়ানো বাংলার মসনদ (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক) মঞ্চায়ন করেন ১৯৯৬সালে নিজ উপজেলাধীন চৌমুহনী বাজারে। এখন আর আগের মতো উচ্চ শব্দের যাত্রাপালার আয়োজন হয় না তাই ভেঙ্গে যাওয়ার পথে তার গানের দল। তারপরও তিনি যেন এখন আকড়ে ধরে আছে ঠিক যেন এখনো তাঁর মন চাচ্ছে মানুষের মনে আনন্দ দিয়ে যাই।

https://eyenewsbd.com/news/12293

Share Button

2 Responsesso far.

  1. […] buy rybelsus with prescription […]

Leave a Reply


↑ উপরে